What did the police find while investigating the murder of Mecher Ali?

World news



কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না খিলক্ষেতের বড়ুয়া এলাকার সবজি বিক্রেতা মেছের আলীর। তার মরদেহ উদ্ধারের পর পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয় অপমৃত্যুর মামলা। কিন্তু একটি ব্যাগ ঘুরিয়ে দিল তদন্তের মোড়। ব্যাগে থাকা জন্মনিবন্ধন কার্ডটি জট খুলেছে রহস্যের।

রাজধানী খিলক্ষেতের বড়ুয়া এলাকা। প্রতিদিনের মতো সবজি বিক্রি শেষে গত ২০ মে রাতে বাসায় ফেরেন মেছের আলী। বাসায় ফিরে পোশাক পরিবর্তন করে বেরিয়ে যান তিনি।

 

মেছের আলী বাড়ি থেকে বের হয়ে ফেরেননি তিন দিন। এমন নাকি প্রায়ই হয়। পরিবারের দাবি, তার কোনো শত্রুও ছিল না। তাই যখন মেছের আলীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হলো তখন পরিবারের পক্ষ একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।

 

সে রাতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মেছের আলী তার নাতিকে বলেছিলেন, রাতে আর বাড়ি ফিরবেন না। পরিবারও বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিয়েছিল। কেন ফিরবেন না, কোথায় যাবেন এসব বিষয়ে কেউ জানতেও চাননি।

 

২৩ মে অর্থাৎ বাড়ি থেকে বের হওয়ার তিন দিন পর বড়ুয়া এলাকার বোয়ালিয়া খালসংলগ্ন একটি হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চরে পাওয়া যায় মেছের আলীর মরদেহ। এরপর তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

 

আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ২৮টি স্বর্ণের বার ও গহনা উদ্ধার, আটক ১

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, সেই রাতে প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টি হচ্ছিল। ঝড়ের কারণে সংকীর্ণ রাস্তা দিয়ে চলাচল করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তারপরও খবর পেয়ে মোবাইলের লাইট ও হাতের লাইট দিয়ে কোনো রকম সেখানে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে মৃতদেহটা পড়ে থাকতে দেখি। পরে সিআইডির ক্রাইম সিন টিমকে আসতে বলি।

 

মরদেহ উদ্ধারের পর দিন আবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশের তদন্তকারী টিম। সুস্থ সবল মেছের আলী বাড়ি থেকে বের হওয়ার তিন দিন পর কীভাবে তিনি মারা গেলেন, তার মৃত্যু কী স্বাভাবিক ছিল নাকি অন্য কোনো কারণে ক্লু খুঁজতে থাকে পুলিশ। যেখানে মেছের আলীর মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল সেখান থেকে কিছুটা দূরে পাওয়া যায় একটি ব্যাগ। যার মধ্যে মেলে একটি জন্মনিবন্ধন ও একটি টিকা কার্ড। সেই ব্যাগের ভেতরে পাওয়া যায় আরেকটি ছোট্ট ব্যাগ। তাতে মেলে একটি জন্মনিবন্ধন ও একটি টিকা কার্ড।

 

অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার বলেন, নতুনের মতো দেখতে একটা ব্যাগ পেয়েছিলাম। পরে সেই ব্যাগের ভেতর আরেকটা ব্যাগ পাই। সেখানে কাপড়-চোপড়সহ বেশকিছু জিনিস পাই। সঙ্গে ছিল একটা টিকা কার্ড ও জন্মসনদ।  

 

জন্মনিবন্ধন সনদে পাওয়া নাম ঠিকানা যাচাই-বাছাই করে পুলিশ মিনা এবং তার স্বামী শাহাবুদ্দিনকে তলব করে থানায়। তদন্ত মোড় নেয় ভিন্ন দিকে। শাহাবুদ্দিন পুলিশকে জানান, ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন আগে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসেন তিনি। পরিচয় হয় নেত্রকোনারই রমজানের সঙ্গে। দুজনে সিদ্ধান্ত নেন ট্রেন নয়, যাবেন ট্রাকে। কারওয়ান বাজারে এসে দুজনে চা পান করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে গেলে শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যান রমজান। আর ঘটনাস্থলে পাওয়া ব্যাগটি শাহাবুদ্দিনকে দেখালে তিনি সেটি শনাক্ত করেন।

 

আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ফল ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

 

এরপর রমজান আলীকে খুঁজতে মাঠে নামে পুলিশ। তাকে পেলেই খুলে যাবে রহস্যের জোট। বরুড়া থেকে শুরু করে খিলক্ষেতের বিভিন্ন এলাকার সিসি ক্যামেরার একাধিক ফুটেজ সংগ্রহ শুরু করে পুলিশ। একটি ফুটেজে ২০ মে রাত ৪টা ২৮ মিনিটে একটি অটোরিকশা থেকে নামতে দেখা যায় মেছের আলীকে। সঙ্গে আরেকজনকে, যার পেছনে সেই ব্যাগ।

 

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ গ্রেফতার করে রমজান আলীকে। রমজান আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন চায়ের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে খাওয়ার পর অজ্ঞান হয়ে যান মেছের আলী। পরে তাকে বালুর চরে রেখেই তার টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। ভুল করে ফেলে যান ব্যাগটি।

 

খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে অজ্ঞান করার পর কেড়ে নেয়া হচ্ছে সর্বস্ব। অতিরিক্ত চেতনানাশক প্রয়োগের ফলে ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা। সম্প্রতি রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় এ রকম ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি। অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া খাবার ডেকে আনতে পারে বিপদ, ঘটতে পারে প্রাণহানি। তাই সাবধানতার বিকল্প নেই।

]]>



source
Rate article
Add a comment